গরু লালন পালন করতে আমাদেরকে সবচেয়ে বেশি যে সমস্যাটির সম্মুখীন হতে হয় তা হলো গরুর কৃমি। কৃমি হলে গরুর স্বাস্থ রক্ষার্থে কৃমিনাশক অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ ঔষধ। এই পোস্টে আমরা জানবো ১টা গরুর কৃমি ট্যাবলেট কয়টা খাওয়াতে হবে এবং ওজন অনুযায়ী গরুর কৃমি ডোজ দেওয়ার সঠিক নিয়ম সম্পর্কে।
১টা গরুর কৃমি ট্যাবলেট কয়টা খাওয়াতে হবে এবং সঠিক ডোজ।
গরুর স্বাস্থ্য ভালো রাখতে কৃমি সমস্যা দ্রুত সমাধান করা অত্যন্ত জরুরি। কৃমি হলে গরুর শরীরে পুষ্টির ঘাটতি সৃষ্টি হয় যা গরুর বৃদ্ধি ও দুধ উৎপাদন সহ স্বাস্থ্যে নান রকম নেতিবাচক প্রভাব পরে। তাই এই সমস্যা দ্রুত সমাধানে কৃমি ট্যাবলেট ব্যবহৃত হয়, যা গরুর ওজন অনুযায়ী নির্ধারণ করা হয়ে থাকে।
গরুর কৃমির ঔষধ খাওয়ার পর কি ভিটামিন খেতে হয় ?
তবে গরুকে সঠিক নিয়মে ওজন অনুযায়ী কৃমি ডোজ করাতে হবে। কারণ ওজন অনুযায়ী ডোজ সঠিক না হলে এটি গরুর শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। তাই আমরা জানতে চাই ১টা গরুর কৃমি ট্যাবলেট কয়টা খাওয়াতে হবে। গরুকে কৃমি ডোজ করানোর পূর্বে আমাদের জানতে হবে গরুর কৃমি আছে কিনা এবং গরুর কৃমির লক্ষণ গুলো সম্পর্কে।
গরুর কৃমি কেন হয় ?
গরুর কৃমি হয়ে থাকে মূলত পরজীবী বা প্যারাসাইট সংক্রমণের কারনে। এ পরজীবী গুলোর প্রধান বাসস্থান হচ্ছে গরুর পাকস্থলী,অন্ত্র এবং রক্তনালীতে। এ জায়গা গুলোতে বাসা বাধে এবং গরুর শরীরের পুষ্টিকর উপাদান গুলো শোষন করতে থাকে। গরুর শরীরে পরজীবী বা কৃমি সংক্রমণ বিভিন্ন কারনেই হয়ে থাকে।
গরুর কৃমি হওয়ার কারন গুলো নিচে উল্লেখ করা হলো:
- পুরাতন বা দূষিত ঘাস এবং দানাদার খাবার থেকে কৃমির ডিম বা লার্ভা গরুর শরীরে প্রবেশ করে।
- পুরাতন বা ২/১ দিন আগের জমানো পানি এবং দূষিত পানি খাওয়ালে এ থেকে গরুর কৃমি হয়ে থাকে।
- অন্যান্য কৃমি আক্রান্ত গরুর পাশাপাশি একই স্থানে খাবার খাওয়ালে কৃমি হয়ে থাকে।
- গরুর থাকার ঘর বা গোয়াল ঘর অপরিষ্কার এবং ভিজে পরিবেশ থাকলে গরুর কৃমি হয়ে থাকে।
- কৃমি ছড়ানো অন্যতম সহজ মাধ্যম গরুর মলমূত্র তাই সবসময় গরুর থাকার জায়গা পরিষ্কার রাখতে হবে।
সাধারণত উল্লেখিত এ কারণ গুলো জন্য গরুর কৃমি হয়ে থাকে।
গরুর কৃমির লক্ষণ।
গরুর কৃমি হয়েছে কিনা তা বোঝার বেশ কিছু লক্ষণ রয়েছে।
গরুর কৃমির লক্ষণ গুলো নিচে উল্লেখ করা হলো:
- গরুর মলমূত্রের সাথে কৃমি এবং কমির ডিম বের হওয়া।
- গরুর খাবার গ্রহনের পরিমান কমে যাওয়া।
- গরুর পেট ফুলে থাকা।
- গরুর দুধ উৎপাদন হ্রাস পাওয়া।
- চামড়ার উজ্জ্বলতা কমে যাওয়া।
- গরুর পাতলা পায়খানা হওয়া।
উল্লেখিত এ লক্ষণ গুলো কোনো গরুর মধ্যে প্রকাশিত হলে বুঝতে হবে গুরুর কৃমি হয়েছে। ১টা গরুর কৃমি ট্যাবলেট কয়টা ।
গরুর কৃমি ট্যাবলেট খাওয়ানোর সঠিক পদ্ধতি।
আমরা জানতে চাই ১টা গরুর কৃমি ট্যাবলেট কয়টা খাওয়ানো উচিৎ, সাধারণত ৫০ কেজি একটি গরুর জন্য ১টি কৃমি ট্যাবলেট নির্ধারণ করা হয়। তবে অধিকাংশ সময় গরুর শারিরীক অবস্থা বিবেচনা করে কৃমি ট্যাবলেট নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। চলুন জেনে নেওয়া যাক ওজন অনুযায়ী গরুর কৃমি ট্যাবলেট খাওয়ানোর সঠিক ডোজ সম্পর্কে।
গরুর কৃমি ট্যাবলেটের সঠিক ডোজের নিয়ম নিচে উল্লেখ করা হলো:
- ৫০ – ৭০ কেজি ওজনের গরুর ক্ষেত্রে ১টি কৃমি ট্যাবলেট সকালে খালি পেটে খাওয়াতে হবে।
- ৭১ – ৯০ কেজি ওজনের গরুর ক্ষেত্রে ১.৫ টি কৃমি ট্যাবলেট গুড়ো করে সকালে খালি পেটে খাওয়াতে হবে।
- ৯১ – ১২০ কেজি ওজনের গরুর ক্ষেত্রে ২টি কৃমি ট্যাবলেট সকালে খালি পেটে খাওয়াতে হবে।
- ১৫০ – ২০০ কেজি ওজনের গরুর ক্ষেত্রে ৩টি কৃমি ট্যাবলেট সকালে খালি পেটে খাওয়াতে হবে।
- গাভীর ক্ষেত্রে বাচ্চা দেওয়ার কমপক্ষে ৪০/৪৫ পর কৃমিনাশক দিতে হবে।
- কৃমি ট্যাবলেট খাওয়ানোর ১/১.৫ ঘন্টা কোনো প্রকার খাবার দেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
উল্লেখিত সঠিক নিয়মে কৃমি ট্যাবলেট খাওয়ালে গরুর স্বাস্থ্য সুস্থ সবল রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
গরুর কৃমি দূর করার ঘরোয়া উপায়।
এতোক্ষণ আমরা জেনেছি ১টা গরুর কৃমি ট্যাবলেট কয়টা খাওয়াতে হয় এ সম্পর্কে। এখন আমরা জানবো কিভাবে কৃমিনাশক ছাড়া গরুর কৃমি প্রতিরোধ করার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে।
গরুর কৃমি প্রতিরোধের ঘরোয়া উপায় নিচে উল্লেখ করা হলো:
- নিমপাতার রস গরুর কৃমি দূর করতে বেশ কার্যকরী।
- রসুন বাটা গরুর কৃমি দূর করতে বেশ কার্যকরী।
- হলুদ গরুর কৃমি দূর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
- পেঁপে বীজ গরুর কৃমি দ্রুত নিরাময় করতে সহায়তা করে।
- মেথি বীজ গরুর কৃমি দূর করতে অত্যন্ত কার্যকরী।
উল্লেখিত পদ্ধতি গুলো অনুসরণ করে সহজেই গরুর কৃমি দূর করতে পারেন।
FAQ
১. গরুর কৃমি হলে কী লক্ষণ দেখা যায়?
উত্তরঃ গরুর কৃমির উল্লেখযোগ্য দুটি লক্ষণ হলো খাবার গ্রহনের পরিমান কমে যাওয়া এবং গরুর পেট ফুলে যাওয়া।
২. গরুর কৃমি ট্যাবলেট কয়দিন পরপর দেওয়া উচিত?
উত্তরঃ গরুকে সাধারণত ৩ মাস পরপর কৃমির ট্যাবলেট খাওয়ানো উচিৎ।

Hello everyone, I’m Mehedi Hasan — a passionate health content creator and the founder of CMH Healths. Since 2015, I have been researching and writing about health topics with the goal of helping people live healthier and more informed lives. I focus on creating practical, research-based content on health and medicine that empowers readers to make confident, evidence-backed decisions.